আন্তর্জাতিক বাবা দিবস: সূর্যের পিতৃত্ব ও জুনের রবিবার
প্রতি বছর জুন
মাসের তৃতীয় রবিবার পালিত হয় ‘আন্তর্জাতিক বাবা দিবস’। কিন্তু কেন এই তারিখটিই
বেছে নেওয়া হয়েছে — তা অনেকেরই অজানা।
প্রাচীন নানা
সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করা হত, সূর্যই জগতের পিতা। তিনি প্রাণের উৎস, শক্তির আধার ও
দিকনির্দেশনার প্রতীক। সেই বিশ্বাস থেকেই পিতা দিবস উদ্যাপনের জন্য নির্বাচিত
হয়েছে ‘সানডে’— অর্থাৎ সূর্যের দিন, রবিবার।
তবে কেন জুন মাসের তৃতীয় রবিবার? এর পেছনে রয়েছে এক গভীর প্রাকৃতিক তাৎপর্য। এটাই বছরের শেষ রবিবার যখন উত্তর গোলার্ধে সূর্যের উপস্থিতি সবচেয়ে দীর্ঘ। ঠিক কয়েকদিন পরেই ঘটে ‘সামার সলস্টিস’ বা উত্তরায়ণ — যেদিন পৃথিবীর উত্তরমেরু সূর্যের দিকে সর্বাধিক হেলে পড়ে। ফলে এই সময় সূর্যের আলো সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছায় আমাদের কাছে। দিন হয় দীর্ঘতম, আলো থাকে সবচেয়ে উজ্জ্বল। এর পর থেকেই দিনের দৈর্ঘ্য ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে।
এই প্রতীকী
আলোকময় মুহূর্তেই আমরা পিতৃত্বকে স্মরণ করি — যিনি জীবনের আলো, অবলম্বন ও
দৃঢ়তার উৎস। বাবা দিবস তাই কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি এক গভীর
কৃতজ্ঞতার প্রকাশ।
এই দিনে আমরা
অভিনন্দন জানাই সেই সব বাবাদের, যাঁরা নিঃস্বার্থ ভালবাসা, শ্রম ও ত্যাগ
দিয়ে আমাদের জীবনকে গড়ে তুলেছেন। পাশাপাশি কৃতজ্ঞতা জানাই সেই সব নারীদের প্রতিও, যাঁরা একজন
পুরুষকে বাবা হয়ে উঠতে সাহায্য করেছেন — জীবনের সহচর হয়ে, সন্তানের জন্ম ও
প্রতিপালনে অংশ নিয়ে।
আমরা চাইলে এই দিনটিতে আমাদের পরম পিতা সূর্যকেও স্মরণ করতে পারি। কারণ, তিনিই তো আদিকাল থেকে পিতার মতো আমাদের পৃথিবীকে আকাশের শূন্যতার ধরে রেখেছেন, দিয়েছেন আলো, উষ্ণতা ও অন্নজলের সংস্থান। তাঁর অবিরাম স্নেহেই আমাদের অস্তিত্বের সুরক্ষা।
Comments
Post a Comment